নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার নান্দিগ্রাম দারুস সালাম আলিম মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীর চেয়ে শিক্ষকের উপস্থিত বেশি। তবে শিক্ষকেরা অফিসে থেকে গল্পগুজব করে সময় কাটাতে বেশি পছন্দ করেন। তবে অধিকাংশ শিক্ষকই প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকেন। আবার করো কারো বিরুদ্ধে মাদ্রাসা চলাকালীন নিজ ব্যাবসা পরিচালনার অভিযোগ পাওয়া যায়।
মাদ্রাসাটির নানান অনিয়ম নিয়ে গত ১১ আগষ্ট কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টালে “রাজশাহীর দুর্গাপুর নান্দিগ্রাম ডি.এস আলিম মাদ্রাসা যেন ভূতের বাড়ি ” শিরোনামে নিউজ প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটিতে, ওই প্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলোনা , মাত্র দুই তিন জন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন, এ ছাড়াও নানান অনিয়মিত দুর্নীতি নিয়োগ বানিজ্য তথ্য প্রকাশিত হয়।
তারই সূত্র ধরে সত্যতা যাচাই ১২ আগষ্ট (শনিবার) সকাল সাড়ে দশটার দিকে ওই মাদ্রাসা চলাকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানটিতে প্রবেশ করতেই শিক্ষক মোশাররফের নেতৃত্বে অফিস থেকে তেড়েফুঁড়ে আসেন শিক্ষক কর্মচারীরা। মাদ্রাসা পরিদর্শন করতে চাইলে তাদের তিব্র আপত্তি বাঁধার মুখে পড়েন উপস্থিত সাংবাদিক-গন । শিক্ষকেরা অফিস কক্ষে সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে আক্রোশ মূলক নানা প্রশ্ন করতে থাকেন। সবমিলিয়ে পুরো মাদ্রাসায় ৭ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
অন্যদিকে শিক্ষক স্টাফ মিলিয়ে ১২ থেকে ১৫ জন উপস্থিত ছিলেন। জানাযায় সকালেই মাদ্রাসা সুপার ও সভাপতি গল্পগুজব করে প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করেন। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির ২২ জন শিক্ষক কর্মচারী নিয়মিত বেতন ভাতা ভোগ করেন। কিন্তু তারা কোনো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করেন না৷
সাংবাদিকদের কাজে বাঁধা প্রদানের নেতৃত্বে থাকা বিতর্কিত শিক্ষক মোশাররফের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিভিন্ন পেপার পত্রিকায় মাঝে মাঝেই আমার নাম পাওয়া যায় জেনে নিয়েন। অনুসন্ধানে জানাযায়, অন্যের জমিতে জোরপূর্বক পুকুর খনন করতে গিয়ে কিছুদিন পূর্বে তার দুই ভাই জেলে খেটেছেন তৎকালীন সময়ে তিনি পলাতক ছিলেন। তার এই অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আপনারদের পরিচয় যাচাই করেছি, আপনারা চিঠি অথবা সভাপতি, সুপারকে জানিয়ে এসেছিলেন? তবে এমন নিয়মের উৎস সম্পর্কে জানতে চাইলে উত্তর দিতে ব্যর্থ হন। মাদ্রাসা পরিদর্শনে বাঁধা প্রদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সুপার উপস্থিত নেই সেই জন্য দেখতে দেইনি। তিনি থাকলে আপনারা আসবেন।
সাবেক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি জানান,
আমাদের মাদ্রাসায় নিয়মিত ক্লাসই হয় না।ক্লাস হবেই বা কি করে আমাদের মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী নেই বলা টাই চরম সত্যি। কিন্তু শিক্ষার্থী না থাকলেও জেডিসি,দাখিল, আলিম পরিক্ষার সময় অন্য প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের ভাড়া করে এনে মাদ্রাসার হয়ে পরিক্ষা দেওয়ান মাদ্রাসার শিক্ষকরা। শিক্ষকদের মধ্যে ও রয়েছে কোন্দল, তারাও নিয়মিত মাদ্রাসায় আসেন-না। তারা শিক্ষকতা করেন নামে মাত্র, কমবেশি সবাই ব্যবসায়ী। মাদ্রাসা চলা কালিন সময় তারা নিজ নিজ ব্যবসা ও নানা পারিবারিক কাজেও লিপ্ত থাকেন। এছাড়াও মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগ নামেও চলে নিয়োগ বানিজ্য।
পূর্বে প্রকাশিত সংবাদে বক্তব্য দেওয়া মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, দাবী করেন তার বক্তব্য সঠিক ভাবে উপস্থাপন হয়নি। তার সাথে সুপারের সমস্যা ছিলো তবে তা মেটার পথে।
মাদ্রাসা সুপার মুসা মিয়ার (01788-096006) এই নাম্বারে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। জানাযায় তিনি দুর্গাপুর বাজারে অবস্থান করছিলেন।
এবিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহিদুল হক জানান, প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে আমারও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে রয়েছি। স্থানীয় কোন্দলে শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে নিরুৎসাহী করছে একটি পক্ষ। মাদরাসা সুপার আমার ফোনও রিসিভ করেন না।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন